আপনার কম্পিউটার জম্বি নয় তো?
এই প্রশ্নের উত্তর
দেওয়া খুব একটা সহজ ব্যাপার না। কেনোনা ভাইরাস এবং ম্যালওয়্যার গুলোকে এমনভাবেই
তৈরি করা হয়, যাতে
এগুলো ধরা না পড়ে। সুতরাং আপনার কম্পিউটার জম্বি হয়ে গেলেও সেটা ধরা একটু মুশকিলই
হবে। তবে আমি নিচে কিছু পয়েন্ট উল্লেখ্য করে দিলাম, আপনি
চেক করে দেখতে পারেন। যদি এই পয়েন্ট গুলোর সাথে আপনার কম্পিউটারের আচরণ মিলে যায়,
তবে হতে পারে আপনার কম্পিউটার জম্বিতে পরিণত হয়েছে।
চিত্র- জম্বি আর্টওয়ার্ক
·
আপনার
কম্পিউটারকে জম্বি বানানোর জন্য যে ম্যালওয়্যার বা ভাইরাস আপনার সিস্টেমে ইন্সটল
করানো হবে সেগুলো আপনার সিস্টেমের প্রসেসর এবং র্যাম ব্যবহার করবে। ফলে আপনি যদি
লক্ষ্য করেন যে, কোন
কাজ না করেই আপনার পিসি স্লো কাজ করছে বা সবসময় ১০০% ডিস্ক, মেমোরি, সিপিইউ ব্যবহার হচ্ছে তবে হতে পারে
আপনার কম্পিউটারটি আক্রান্ত।
·
আপনার
ইমেইল অ্যাকাউন্টের সেন্ট ম্যাসেজ গুলো চেক করে দেখুন, আপনার যদি মনে হয় কোন ম্যাসেজ কাওকে পাঠিয়েছেন
কিন্তু আপনি কখনোই তা টাইপ করেন নি, তবে হতে পারে আপনার
কম্পিউটারটি আক্রান্ত হয়েছে।
·
জম্বি
কম্পিউটারের আইপি অ্যাড্রেস গুলোকে ব্ল্যাকলিস্ট করে রাখা হয়। প্রথমে গুগলে গিয়ে লিখুন “WHAT IS MY IP” —এভাবে আপনি আপনার আইপি অ্যাড্রেস খুঁজে পাবেন,
তারপর “http://whatismyipaddress.com/blacklist-check” এই লিঙ্ক থেকে আপনার আইপি ব্ল্যাকলিস্টেড কিনা তা চেক করে নিতে পারেন। যদি
ব্ল্যাকলিস্টেড হয় তবে আপনার কম্পিউটার আক্রান্ত হতে পারে।
·
যেহেতু
ক্র্যাকার আপনার কম্পিউটারকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রন করে তাই আপনার
ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ এর দিকে নজর রাখুন,
যদি দেখতে পারেন সবসময় আপনার ব্যান্ডউইথ হাই স্পীডে খরচ হচ্ছে
তবে হতে পারে আপনার কম্পিউটার ক্র্যাকার নিয়ন্ত্রন করছে।
জম্বি হওয়া থেকে কিভাবে বাঁচবেন?
আপনি অবশ্যই কখনোই
চাইবেন না যে, আপনার
সাধের কম্পিউটারটি জম্বি হয়ে যাক। সুতরাং আপনাকে একে অবশ্যই জম্বি হওয়া থেকে রক্ষা
করতে হবে, কিন্তু কিভাবে? চিন্তা
করার কোন কারন নেই বন্ধু, আমি কিছু বেস্ট স্টেপ শিখিয়ে
দিচ্ছি, এগুলো পালনের মাধ্যমে আপনি সর্বাধিক সুরক্ষিত
থাকতে পারবেন। এবং সাথে আপনি চাইলে এই সাইটের সিকিউরিটি ক্যাটাগরি থেকে সকল পোস্ট
গুলো অনুসরন করতে পারেন, সেগুলো আপনাকে বিভিন্ন হ্যাক বা
অ্যাটাক থেকে বাঁচাতে সাহায্য করবে।
এন্টিভাইরাস অবশ্যই প্রয়োজনীয়
আপনাকে সুরক্ষিত থাকার
জন্য তো বেস্ট সিকিউরিটি অনুশীলন করতে হবেই কিন্তু সাথে ভালো এন্টিভাইরাস অবশ্যই
প্রয়োজনীয়। আপনি ভালো এন্টিভাইরাস গুলোকে যেমন- ইসেট, কুইকহিল, বিট
ডিফেন্ডার ইত্যাদি কিনে ব্যবহার করতে পারেন, তবে মনে
রাখবেন কখনোই কোন এন্টিভাইরাসের ক্র্যাক ভার্সন ব্যবহার করবেন না। আর যদি পারেন,
তো সকল সফটওয়্যারের ক্র্যাক ব্যবহার করা বন্ধ করুন, কেনোনা এর মাধ্যমেই আপনি আগে আক্রান্ত হতে পারেন। আপনি যদি এভিজি বা
অ্যাভাস্ট ইত্যাদি এন্টিভাইরাস গুলোর ফ্রী ভার্সন ব্যবহার করে থাকেন তবে অবশ্যই
সেগুলোকে নিয়মিত আপডেট রাখুন এবং অবশ্যই চেষ্টা করে কোন পেইড এন্টিভাইরাস কিনে
ব্যবহার করুন। এন্টিভাইরাসের পাশাপাশি অবশ্যই ভালো কোন স্পাইওয়্যার স্ক্যানার
ইন্সটল করুন। এই স্ক্যানার গুলো আপনার কম্পিউটারের ইন্টারনেট ট্র্যাফিক মনিটর করে
এবং সন্দেহ মূলক কিছু দেখলে আপনাকে সতর্ক করে দেয়। অবশ্যই এন্টি-স্পাইওয়্যার
প্রোগ্রামকে আপডেট রাখুন।
ফায়ারওয়াল ব্যবহার করুন
আপনার নেটওয়ার্ককে
প্রটেক্ট করার জন্য ভালো ফায়ারওয়াল ইন্সটল করুন। আপনার রাউটারেরসাথে
ডিফল্ট ফায়ারওয়াল থাকে, সেটিকে
এনাবল করে রাখুন, সাথে রাউটার ফ্রেমওয়্যার আপডেট আসার
সাথে সাথেই তা আপডেট করে নিন। আপনি যদি রাউটার না ব্যবহার করেন তবে আপনার
কম্পিউটারে ভালো ফায়ারওয়াল ব্যবহার করুন, এখনকার অনেক
এন্টিভাইরাসের সাথে ডিফল্ট ফায়ারওয়াল থাকে। ফায়ারওয়াল সম্পর্কে আরো বিস্তারিত
জানতে “ফায়ারওয়াল (Firewall)
কি? আপনার জন্য কতটা
প্রয়োজনীয়?” এই পোস্টটি পড়তে পারেন।
শক্তিশালী পাসওয়ার্ড
কম্পিউটার সিকিউরিটি নিয়ে
আমি যতো গুলো আর্টিকেল লিখেছি এই পর্যন্ত এদের প্রায় সবখানে “শক্তিশালি পাসওয়ার্ড” ব্যবহার
করার জিকীর করেছি। যেকোনো অ্যাকাউন্টে এমন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন যা সহজে কেউ
অনুমান করতে পারবে না এবং অবশ্যই একই পাসওয়ার্ড একাধিক স্থানে ব্যবহার করবেন না,
সাথে পাসওয়ার্ডটি যতটা লম্বা করতে পারেন ততোই ভালো। সব পাসওয়ার্ড
গুলোকে মনে রাখার জন্য অবশ্যই ভালো পাসওয়ার্ড
ম্যানেজার ব্যবহার করুন।
No comments:
Post a Comment